About Me

header ads

সতীত্ব বেল্ট – ইতিহাস না ভুল ধারণা?

সতীত্ব বেল্ট
সতীত্ব বেল্ট

প্রতিবেদন: বাপ্পা দে | চট্রগ্রাম প্রতিনিধি |

তারিখ: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫

নারীদের শুদ্ধতা রক্ষার জন্য মধ্যযুগের ইউরোপে ব্যবহৃত হতো এক ভয়ংকর অস্ত্র— ‘সতীত্ব বেল্ট’। নাইটরা যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়ার আগে স্ত্রীদের কোমরে পরিয়ে যেতেন এই ধাতব তালাবদ্ধ বেল্ট, যাতে তারা অন্য কারও সাথে ফিজিক্যাল  সম্পর্ক গড়তে না পারেন। কিন্তু আসলেই কি এই গল্প সত্য?

অনেকের ধারণা, ১৪-১৫ শতকে এই বেল্ট ব্যবহৃত হতো। তবে গবেষণা বলছে, এর প্রকৃত কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। সতীত্ব বেল্টের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১৫০০ শতকের একটি ব্যঙ্গাত্মক লেখায়। আর যেসব বেল্ট মিউজিয়ামে পাওয়া যায়, তার বেশিরভাগই ১৮ বা ১৯ শতকের তৈরি।

প্রকৃতপক্ষে, মধ্যযুগে এই ধরনের ধাতব বেল্ট ব্যবহারের কোনো বাস্তব প্রমাণ নেই। এটি ছিল মূলত ১৮-১৯ শতকের ভুল চিকিৎসা পদ্ধতির অংশ, যা হস্তমৈথুন বা ‘অনৈতিক আচরণ’ প্রতিরোধের জন্য ব্যবহৃত হতো।

ধারণা করা হয়, এই বেল্ট দীর্ঘদিন ধরে পরা হলে এটি মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করত। দীর্ঘমেয়াদে এটি সংক্রমণ, ত্বকের সমস্যা এবং চরম অস্বস্তি তৈরি করতে পারত, যা বাস্তবে অসম্ভব মনে হয়।

নারীদের নিয়ন্ত্রণের জন্য বহু বছর ধরে সমাজে নানা গুজব ও কল্পকাহিনী চালু রয়েছে। সতীত্ব বেল্টের ধারণাটিও এমনই একটি বিভ্রান্তি, যা নারীদের স্বাধীনতাকে খর্ব করার চেষ্টা মাত্র।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে। অনেকেই নারীদের সুরক্ষার জন্য কঠোর নিয়ম বা প্রযুক্তিগত উপায় খোঁজেন। তবে ইতিহাস বলে, কোনো যন্ত্র নয়, সমাজের মানসিকতার পরিবর্তনই পারে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।

সতীত্ব বেল্টের ইতিহাস নিয়ে বহু বিভ্রান্তি রয়েছে। এটি মধ্যযুগের বাস্তব কোনো পদ্ধতি ছিল না, বরং এটি একটি গুজব, যা ভুলভাবে প্রচারিত হয়েছে। ‘সতীত্ব বেল্ট’-এর মতো অমানবিক ধারণা আমাদের সমস্যা সমাধান করতে পারে না। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধে প্রয়োজন কঠোর আইন প্রয়োগ, সচেতনতা বৃদ্ধি,  নারীর ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন।

নিউজ ডেস্ক | বুলেটিন সংবাদ

Post a Comment

0 Comments