About Me

header ads

চাঁদাবাজ গডফাদার হাসান মুকিম চক্র - সাংবাদিকতার আড়ালে চাঁদাবাজি

Hasan Tarek Mukim
চাঁদাবাজ হাসান মুকিম

প্রতিবেদন: তানবীর হাসান প্রতীক | কক্সবাজার প্রতিনিধি |

তারিখ: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫

অসৎ ও ভুয়া সাংবাদিকদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র যার নেতৃত্ব দেন চাঁদাবাজ হাসান মুকিম। এই চক্র সাংবাদিকতার পবিত্রতাকে ধ্বংস করে চাঁদাবাজিকে পেশায় পরিণত করেছে।

হাসান মুকিম দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার রামু প্রতিনিধি পরিচয়ে সাংবাদিকতার নামে সাংঘাতিকতা করে আসছে। আওয়ামী দূষর এমপি কমলের পারসোনাল রিপোর্টার হিসাবে পরিচিত এই সাংঘাতিক হাসান মুকিম একসময় এমপি কমলের বিভিন্ন অপকর্ম ধামাচাপা দিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতো। এমপি কমলের পরিকল্পনায় মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা ছিল তার প্রধান কাজ। তার অর্থ উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম ছিল এমপির হয়ে অপপ্রচার চালানো।

রাজনৈতিক পালাবদলে এমপি কমলের ক্ষমতাধসের পর হাসান মুকিমের আয়ের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। এরপর সে আরও ভয়াবহ এক চাঁদাবাজির পথ বেছে নেয় এবং হয়ে ওঠে ভুয়া সাংবাদিক চক্রের গডফাদার। তার নেতৃত্বে রয়েছে একদল ভুয়া সংবাদকর্মী, যাদের প্রত্যেকের কাজ নির্দিষ্টভাবে ভাগ করা।

‘কক্সবাজার খবর’ নামের একটি নিউজ পোর্টালকে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও পরিকল্পিত ভুয়া তথ্য নিউজ আকারে সাজিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জিম্মি করে চাঁদা আদায় করে থাকে এই চক্র। চাঁদাবাজ হাসান মুকিমের রয়েছে একাধিক ফেইক সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট, যেখানে এসব ভুয়া সংবাদ শেয়ার করে সহজেই মানুষের মাঝে গুজব ছড়িয়ে নিজের উদ্দেশ্য হাসিল করেন।

এই চক্রটি অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দলগতভাবে কাজ করে। কেউ সাংবাদিক পরিচয়ে সামনে আসে, কেউ এলাকার তথ্য সংগ্রহ করে, কেউ ক্যামেরা নিয়ে নাটকীয় দৃশ্য তোলে, আবার কেউ ভিত্তিহীন বানোয়াট রিপোর্ট টাইপ করে। গডফাদার হাসান মুকিম মধ্যস্থতাকারী হিসেবে চাঁদার দরদাম করে।

এই চক্র সেইসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে যাদের সামাজিক মর্যাদা আছে কিংবা যাদের কোনো লাইসেন্সগত বা কাগজপত্রে ছোটখাটো ত্রুটি থাকতে পারে। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়ে “সংবাদ হবে” বলে ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি করে।

চক্রটির সাধারণ কৌশল হলো—প্রথমে একটি সাজানো অভিযোগপত্র পাঠানো, যাতে লেখা থাকে, “আপনার প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি বা অনিয়ম রয়েছে, আমরা রিপোর্ট করবো।” যদি ভুক্তভোগী চুপচাপ টাকা না দেয়, তাহলে নিজেদের তৈরি ফেক সংবাদপোর্টালে বানোয়াট রিপোর্ট ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

এই চক্রের কাছে মানবিকতা বা সাংবাদিকতা বলে কিছু নেই—শুধুই ভয়ভীতির চাঁদাবাজি। তারা সমাজের সৎ ও প্রতিষ্ঠিত মানুষদের আঘাত করে, তাদের সম্মানহানির চেষ্টা করে। গডফাদার হাসান মুকিম প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে চাঁদাবাজিকে নিয়মিত করে চলেছেন। ইতিমধ্যে শতাধিক সমাজসেবক, রাজনৈতিক ব্যক্তি, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ এই চক্রের দ্বারা হয়রানির শিকার হয়েছেন।

এই চক্র কখনও কখনও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে টার্গেট ব্যবসায়ীদের কাছে মেসেজ পাঠিয়ে কৌশলে চাঁদা দাবি করে। এক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জানান, প্রতিনিয়ত হয়রানিমূলক মিথ্যা অভিযোগের ভয়ে চাঁদা দিতে বাধ্য হয়েছেন। সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে চাঁদা দিয়ে যেতে হয়েছে, কিন্তু এখন দাবি বাড়ছে এবং সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও জানান, প্রায়ই 01818104195 নম্বর থেকে মেসেজ আসে এবং ২৭-০১-২০২৫ তারিখে ঐ নম্বর থেকে ৪০০০ ও ২০০০ টাকা করে দুইবার চাঁদা আদায় করা হয়।

চাঁদাবাজ হাসান মুকিম সমাজের জন্য এক ধরনের ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে, যাদের প্রতিরোধ করা এখন সময়ের জোরালো দাবি। অন্যথায় চাঁদাবাজ হাসান মুকিমের এই চাঁদাবাজ চক্র মহামারী আকার ধারণ করতে পারে।

"স্থানীয় সচেতন নাগরিক মহল বুলেটিন টিভির মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের উদ্দেশ্যে চাঁদাবাজ হাসান মুকিম চক্রকে প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে বার্তা দিয়েছেন।"

স্থানীয় সচেতন নাগরিক মহলের মতে, প্রথমত, ভুক্তভোগীদের উচিত সাহসিকতার সঙ্গে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। চাঁদা দাবির প্রমাণ, ভয়ভীতি ও হুমকির বার্তা সংরক্ষণ করে সাইবার অপরাধ দমন বিভাগ বা নিকটস্থ থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করা।

দ্বিতীয়ত, সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে এসব ভুয়া ও অসৎ ব্যক্তিদের বয়কট করে প্রেস কাউন্সিলসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানাতে হবে।

তৃতীয়ত, সচেতন সমাজ ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যমকে এদের মুখোশ উন্মোচনে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। অনুমোদনহীন, ফেক পোর্টাল ও ভুয়া আইডি থেকে প্রকাশিত খবরকে আমলে না নিয়ে সঠিক তথ্য যাচাইয়ের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।

এই ধরনের সংঘবদ্ধ চক্রকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করাই একমাত্র কার্যকর উপায়—যাতে ভবিষ্যতে কেউ সাংবাদিকতার মতো মহান পেশাকে অপব্যবহার করার সাহস না পায়।

নিউজ ডেস্ক | বুলেটিন সংবাদ

Post a Comment

0 Comments